রাজ্য আইনসভা: গঠন ও কার্যাবলি (State Legislature)
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১) পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার গঠন বর্ণনা করাে।
উত্তর : ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যে একটি করে আইনসভা গঠনের ব্যবস্থা রয়েছে। ২৮টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৫টি অঙ্গরাজ্যের আইনসভা যেমন—বিহার, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ এবং এবং বাকি ২৩টি অঙ্গরাজ্যের আইনসভা এক কক্ষবিশিষ্ট। কিছু অঙ্গরাজ্যের আইনসভার দুটি কক্ষ থাকে। উচ্চকক্ষকে বিধান পরিষদ (Legislative Council) এবং নিম্নকক্ষকে বিধানসভা (Legislative Assembly) বলা হয়। বিধান পরিষদ, গঠন বা বিলােপ সম্পর্কে সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে যে বিধানসভার মােট সদস্যের অধিকাংশ এবং উপস্থিত ও ভােটদানকারী সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনে বিধান পরিষদ সৃষ্টি বা বিলােপের প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে পার্লামেন্ট সংশ্লিষ্ট রাজ্যে বিধান পরিষদ গঠন বা বিলােপ করতে পারে। যে-সকল রাজ্যে আইনসভার একটি কক্ষ থাকে তাকে বিধানসভা বলা হয়। পশ্চিমবঙ্গে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে বিধান পরিষদের বিলােপসাধন করা হয়েছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা এক কক্ষবিশিষ্ট।
পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা বিধানসভা
যে-সকল রাজ্যে আইনসভা এক কক্ষসমন্বিত তা বিধানসভা নামেই অভিহিত হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার গঠন ও কার্যাবলি আলােচনা করলেই বিধানসভার গঠন ও কার্যাবলি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার আসন সংখ্যা হল ২৯৪। এই সদস্যগণ সর্বজনীন। প্রাপ্তবয়স্কের ভােটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত হন। নির্বাচনের জন্য সমগ্র রাজ্যকে এক আসন। সমন্বিত নির্বাচনী এলাকায় ভাগ করা হয়। পার্লামেন্টের আইনে নির্বাচনী এলাকা পুনর্বণ্টন এবং বিধানসভার আসন নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচিত সদস্যগণ ছাড়া রাজ্যপাল একজন ইঙ্গ-ভারতীয় সদস্য মনােনয়ন করতে পারেন। এই মনােনয়ন ব্যবস্থা এবং তফশিলি জাতি ও তফশিলি উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা ২০০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে স্থির হয়েছিল। সংবিধানের ৬২-তম সংশােধন আইনে (১৯৯০) এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা বজায় রাখা হয়েছিল। ২০০০ খ্রিস্টাব্দে সংবিধান সংশােধন করে এই ব্যবস্থা আরও ১০বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সদস্যগণের যােগ্যতা ও সভার কার্যকাল
বিধানসভার সদস্যকে (i) ভারতীয় নাগরিক হতে হবে, (ii) তাঁর অন্তত ২৫বছর বয়স হওয়া প্রয়ােজন, (iii) বিকৃতমস্তিষ্ক, দেউলিয়া বা পার্লামেন্টের আইনে অযােগ্য বলে বিবেচিত কেউ বিধানসভার সদস্য হতে পারবেন না, (iv) বিধানসভার সদস্য ভারত সরকার বা রাজ্য সরকারের অধীনে কোনাে লাভজনকপদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের দলত্যাগ বিরােধী আইন অনুযায়ী দলের সদস্যপদ ত্যাগ করলে আইনসভার সদস্য থাকা যাবে না। বিধানসভার কার্যকাল পাঁচ বছর, কিন্তু এই সময়ের পূর্বে রাজ্যপাল বিধানসভা ভেঙে দিতে পারেন। জরুরি অবস্থা ঘােষণা বলবৎ হলে পার্লামেন্ট আইন করে বিধানসভার মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করতে পারে।
স্পিকার
বিধানসভার সদস্যদের মধ্যে থেকে একজন স্পিকার এবং একজন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন। স্পিকার বা বিধানসভার অধ্যক্ষের কার্যাবলি ও ভূমিকা লােকসভার স্পিকারের অনুরূপ। বিধানসভার অধিকাংশ সদস্য ১৪ দিন পূর্বে নােটিশ দিয়ে স্পিকারকে পদচ্যুত করবার প্রস্তাব গ্রহণ করলে স্পিকারকে পদচ্যুত করা যায়। স্পিকার হলেন বিধানসভার সভাপতি। সভার কাজ পরিচালনা করা, আলােচনা, বিতর্ক নিয়ন্ত্রণ করা এবং নিয়ম শৃঙ্খলা রক্ষার গুরুদায়িত্ব স্পিকারের ওপর ন্যস্ত। সভার কাজ পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করলে এবং শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে স্পিকার সেই সদস্যকে বহিষ্কার করতে পারেন। নিয়মমাফিক কাজ পরিচালনা অসম্ভব বিবেচনা করলে বিধানসভার অধিবেশন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে পারেন। সভার কাজ সম্পর্কে কোনও বৈধতার প্রশ্ন উঠলে স্পিকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। অর্থবিল সম্পর্কে স্পিকারের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। কোনাে বিল অর্থবিল কিনা সে সম্পর্কে স্পিকারকে একটি প্রমাণপত্র দিতে হয়। বিধানসভার সঙ্গে রাজ্যপালের সংযােগ রক্ষার প্রধান দায়িত্ব স্পিকারের, বিধানসভার অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও স্পিকারের ওপর ন্যস্ত। সরকার, বিরােধী দল এবং বিধানসভার প্রত্যেক সদস্যের অধিকার ও স্বার্থরক্ষায় স্পিকারের বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করতে হয়। স্পিকারের নিরপেক্ষতা ও স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গির ওপর বিধানসভার মর্যাদা নির্ভর করে।১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারি কেরল বিধানসভার স্পিকার এ.সি. জোস তার নির্ণায়ক ভােটে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে এক অভিনব নজির স্থাপন করেছেন। বিধানসভায় করুণাকরণ সরকারের পক্ষে ৭০টি ভােট এবং বিপক্ষে ৭০টি ভােট পড়ে। স্পিকার এক্ষেত্রে সঠিক নিরপেক্ষতা গ্রহণ না করে তার নির্ণায়ক (Casting Vote) সরকারের পক্ষে প্রদান করে সরকারের পতন রক্ষা করেন। স্পিকারের ভূমিকা নিয়ে তাই সমালােচনা শুরু হয়েছে।
প্রশ্ন ২) বিধান পরিষদের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলােচনা করাে।
উত্তর : বিধান পরিষদের ক্ষমতা ও কার্যাবলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল –
(ক) আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতা :
অর্থবিল ছাড়া অন্যান্য যে-কোনাে বিল বিধান পরিষদে উত্থাপন করা যায়। তবে অন্যান্য বিল পাসের ক্ষেত্রে বিধান পরিষদের তেমন কোনাে কার্যকারী ক্ষমতা নেই। বিধানসভায় পাস হওয়া কোনাে বিলকে বিধান পরিষদ সর্বাধিক ৪ মাস আটকে রাখতে পারে। অবশ্য বিধানসভায় সংশ্লিষ্ট বিলটি পুনরায় গৃহীত হলে সেই বিলের ক্ষেত্রে বিধান পরিষদের সম্মতির প্রয়ােজন হয় না। সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভারতীয়। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা যে ধরনের ক্ষমতা ভােগ করে থাকে রাজ্যের আইনসভার উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদের হাতে সেরূপ কোনাে ক্ষমতা নেই।
(খ) আর্থিক ক্ষমতা :
রাজ্য আইনসভার উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদের আর্থিক ক্ষমতা অত্যন্ত সংকুচিত। অর্থবিল বিধান পরিষদে উত্থাপন করা যায় না। বিধানসভা কর্তৃক গৃহীত অর্থবিল বিধান পরিষদে প্রেরিত হলে ১৪ দিনের মধ্যে সুপারিশসহ বা সুপারিশ ছাড়া বিলটিকে বিধানসভার কাছে ফেরত দিতে বিধান পরিষদ বাধ্য থাকে। তা ছাড়া বিধান পরিষদের সুপারিশ বিধানসভা গ্রহণ বা বর্জন দুই-ই করতে পারে। কোনাে বিল অর্থবিল কিনা সে বিষয়ে বিধানসভার স্পিকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়।
(গ) শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা :
রাজ্যের শাসন বিভাগ বা মন্ত্রীসভাকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনাে ক্ষমতা রাজ্য বিধান পরিষদের হাতে দেওয়া হয়নি। সংবিধান অনুসারে রাজ্য মন্ত্রীসভা শুধুমাত্র রাজ্য বিধানসভার কাছে দায়বদ্ধ। অবশ্য বিধান পরিষদের হাতে দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব উত্থাপন, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ও সমালােচনার ক্ষমতা রয়েছে।
(ঘ) অন্যান্য ক্ষমতা :
অন্যান্য ক্ষেত্রেও বিধান পরিষদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। যেমন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাজ্য আইনসভার সদস্য হিসাবে বিধান পরিষদের সদস্যরা অংশ নিতে পারেন না। এছাড়া সংবিধান সংশােধনী বিলে বিধান পরিষদের অনুমােদন অপরিহার্য নয়। পরিশেষে বলা যায়, ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজ্য আইনসভার উচ্চকক্ষ হিসাবে বিধান পরিষদের যৌক্তিকতা নিয়ে বহু আগেই প্রশ্ন দেখা দেয়। এই কারণে পশ্চিমবঙ্গসহ অনেক রাজ্যে বিধান পরিষদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করা হয়। বর্তমানে মাত্র ৬টি রাজ্যে বিধান পরিষদের অস্তিত্ব রয়েছে। এই রাজ্যগুলি হল উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং জম্মু ও কাশ্মীর।
প্রশ্ন ৩) বিধানসভার ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলােচনা করাে।
উত্তর : রাজ্যের আইনসভা কেন্দ্রীয় আইনসভার ন্যায় ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী না হলেও বহুবিধ কার্য রাজ্যের আইনসভাকে সম্পন্ন করতে হয়। আমরা বিধানসভার ক্ষমতা ও কার্যাবলিকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে বিভক্তি করে আলােচনা করতে পারি—
(ক) আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত (Legislative) :
রাজ্যের আইনসভা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সমগ্র অঞ্চল বা বিশেষ কোনাে অঙ্কুলের জন্য আইন প্রণয়নের অধিকারী। এমনিতে সরকারকে প্রতিনিয়ত সমগ্র রাজ্যের জন্য অসংখ্য আইন প্রণয়ন করতে হয়। তবে মাঝে মাঝে যে বিশেষ একটি অঞ্চলের জন্য আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে হয় এরূপ একটি দৃষ্টান্ত হল—
দার্জিলিং পার্বত্য পরিষদের বর্তমান আইনের কিছু অংশের পরিবর্তনের জন্য একটি নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়ােজনীয়তা দেখা দিয়েছে।সংবিধানে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতাগুলিকে তিনটি তালিকায় বিন্যস্ত করা হয়েছে। এগুলি হল : (i) কেন্দ্রীয় তালিকা, (ii) রাজ্যতালিকা, (iii) যুগ্মতালিকা। রাজ্যের আইনসভা রাজ্য তালিকাভুক্ত সকল বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে পারে, তবে জরুরি অবস্থার সময়ে কেন্দ্রের পার্লামেন্ট রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয়েও আইন প্রণয়ন করতে পারে। যুগ্ম-তালিকাভুক্ত বিষয়ে রাজ্যের আইনসভা আইন প্রণয়ন করতে পারে। তবে এ সম্পর্কে সংবিধানে বলা হয়েছে যে রাজ্যের প্রণীত আইনের সঙ্গে যদি কেন্দ্রীয় আইনের সংঘাত ঘটে তবে কেন্দ্রীয় আইন যথারীতি প্রাধান্য লাভ করবে অর্থাৎ কার্যকর হবে।
রাজ্য আইনসভাতে আইনের খসড়া অর্থাৎ বিল গৃহীত হলে তা রাজ্যপালের কাছে প্রেরিত হয়। রাজ্যপাল সেই বিলে সম্মতি দিতে পারেন অথবা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন। এইভাবে ফিরে আসা কোনাে বিল যদি পুনরায় রাজ্যের বিধানসভার দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় অবিকৃতভাবে অনুমােদন করে তবে রাজ্যপাল তাতে সম্মতি প্রদানে বাধ্য। অনেক সময় আবার রাজ্যের বিধানসভার দ্বারা গৃহীত বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর না করে রাষ্ট্রপতির নিকট তার সম্মতি বা স্বাক্ষরের জন্য প্রেরণ করেন। আমরা লক্ষ করেছি যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় গৃহীত এমন অনেক বিল রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের জন্য প্রেরিত হয়েছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল ট্রাম কোম্পানির পরিচালন ভার অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিল।
(খ) অর্থ সংক্রান্ত (Financial) :
রাজ্য সরকারের আয়ব্যয়ের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষ তথা বিধানসভার হাতে অর্পিত হয়েছে। এখানে আমাদের বিশেষভাবে লক্ষ করা দরকার যে অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারণত বিধান পরিষদের কোনাে ক্ষমতা নেই। সুতরাং আইনসভার অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা বলতে বিধানসভার ক্ষমতাকেই বােঝায়। অর্থবিল শুধুমাত্র বিধানসভাতেই উত্থাপন করা যায়। বিধানসভা কর্তৃক অনুমােদিত এবং প্রেরিত অর্থবিল বিচার-বিবেচনা করে বিধান পরিষদকে (যে-সকল রাজ্যে বিধান পরিষদ আছে) ১৪ দিনের মধ্যে বিধানসভার কাছে প্রত্যর্পণ করতে হয়। যদি নির্ধারিত ১৪দিন অতিক্রান্ত হয়ে যায় তবে বিধান পরিষদের মতামতের কোনাে গুরুত্ব থাকে। রাজ্যপালের সম্মতির ভিত্তিতে বিলটি যথারীতি আইনে পরিণত হয়।
(গ) শাসন সংক্রান্ত (Executive) :
রাজ্য সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করা রাজ্য আইনসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সংসদীয় গণতন্ত্রের নিয়ম অনুসারে রাজ্যের মন্ত্রীগণ যৌথভাবে তাদের কাজকর্মের জন্য বিধানসভার নিকট দায়ী থাকে। বিধানসভায় যদি মন্ত্রীসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয় বা গুরুত্বপূর্ণ কোনাে বিষয়ে ভােটাভুটিতে মন্ত্রীসভার পরাজয় ঘটে তবে মন্ত্রীসভাকে পদত্যাগ করতে হয়। প্রশ্নোত্তর, মুলতুবি প্রস্তাব, দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব ইত্যাদির মাধ্যমে বিরােধী পক্ষ মন্ত্রীদের কার্যকলাপ সম্পর্কে আলােচনা ও বিতর্কের সূচনা করে এবং মন্ত্রীদের কাজকর্ম যদি আকাঙ্ক্ষিত পথে পরিচালিত না হয় তবে তাদের সমালােচনা করা হয়।
(ঘ) সংবিধান সংশােধন সংক্রান্ত (Constitutional) :
ভারতীয় শাসনতন্ত্রে মৌলিক কাঠামাে ও নীতি সংক্রান্ত কিছু কিছু বিষয়ে সংবিধান সংশােধনের জন্য রাজ্যের আইনসভাগুলির সম্মতি প্রয়ােজন হয়। ৩৮৬নং ধারায় এই ধরনের ৫টি বিষয় উল্লিখিত আছে। যেগুলির ক্ষেত্রে রাজ্যের আইনসভাগুলিকে তাদের মতামত জানাতে হয়।
(ঙ) রাষ্ট্রপতি নির্বাচন (Election of President) :
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাজ্যের আইনসভার তথা বিধানসভার সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন। আমরা আগেই দেখেছি যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের উদেশ্যে যে নির্বাচক সংস্থা গঠিত হয় বিধানসভার সদস্যগণ তার সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত হন।
(চ) তথ্য সরবরাহ সংক্রান্ত (Information) :
মন্ত্রীদের উত্তর ও বিবৃতিদানের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপিত হয়। এছাড়া রাজ্যের অর্থনৈতিক সমীক্ষা প্রকাশিত হয়। এভাবে সরকারের কার্যাবলি সম্পর্কে জনগণ অবগত হওয়ার সুযােগ লাভ করেন।
(ছ) অন্যান্য কাজ (Other functions) :
রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও পদাধিকারী যথা—রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ইত্যাদির দ্বারা প্রদত্ত প্রতিবেদনগুলি বিধানসভাকে পর্যালােচনা করতে হয়। এছাড়া রাজ্যের ভৌগােলিক সীমার পরিবর্তন, নাম পরিবর্তন, অধ্যক্ষ বা উপাধ্যক্ষের অপসারণ এবং কমনওয়েলথ সংসদীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন ইত্যাদি দায়িত্ব বিধানসভাকে পালন করতে হয়।
প্রশ্ন ৪) পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার আইন প্রণয়ন পদ্ধতি বর্ণনা করাে।
উত্তর : আইনসভার প্রধান কাজ হল আইন প্রণয়ন করা। পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার দ্বিতীয় কক্ষ অবলুপ্ত করায় পশ্চিমবঙ্গের এক-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা আছে। তাই রাজ্যে সকল বিল একমাত্র বিধানসভাতেই উত্থাপিত এবং গৃহীত হয়। বিধানসভায় অনুমােদনের জন্য যে-সকল বিল উত্থাপন হয় সেগুলিকে দু-ভাগে ভাগ করা যায় :
(১) সরকারি বিল (Public or Government Bills) এবং (২) বেসরকারি সদস্যের বিল (Private Members’ Bills)।
সরকারি বিল আবার দু-ধরনের হতে পারে ও সাধারণ বিল এবং অর্থ বিল।
• সাধারণ বিল অনুমােদন : আইন প্রণয়নের পদ্ধতি বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত এবং আইন প্রণয়ন একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এই সম্পর্কে সংবিধানের কতকগুলি নিয়ম আছে : অর্থবিল ছাড়া অন্য সকল সরকারি ও বেসরকারি বিল সংসদের যে-কোনাে কক্ষে প্রস্তাবিত ও উত্থাপিত হতে পারে। প্রত্যেক বিল বিধানসভায় গৃহীত হওয়ার জন্য কতকগুলি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
(ক) বিলের উত্থাপন বা প্রথম পাঠ : যে-কোনাে বিল উত্থাপনের আগে সভাকে অবহিত করে সভার অনুমতি প্রার্থনা করতে হয়। বিধানসভায় কোনাে সাধারণ বিল উত্থাপন করতে হলে এক মাস আগে বিলটি উত্থাপনের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করতে হয়। কোনাে মন্ত্রীকে বিল উত্থাপনের জন্য আগে থেকে অনুমতি নিতে হয় না। বিল উত্থাপনের প্রাথমিক প্রক্রিয়াকে বিলের উত্থাপন এবং প্রথম আলােচনা (Introduction and First Reading) বলে। এই স্তরে বিলটি সম্পর্কে বিবেচনা হয় না, কেবল বিলের শিরােনাম পাঠ করা হয়।
(খ) কমিটি স্তর বা দ্বিতীয় আলােচনা : বিলটি যদি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানাে হয় তাহলে ওই কমিটি বিলটি বিবেচনা করে কমিটির সুপারিশসহ বিলটি বিধানসভায় পাঠায়। এই স্তরকে কমিটি স্তর (committee stage) বলা হয়। এই স্তরের পর বিলটির উত্থাপক ওই বিলটি দ্বিতীয় আলােচনার জন্য (Second Reading) প্রস্তাব করেন।
(গ) বিলের দ্বিতীয় পাঠ : বিলের দ্বিতীয় পাঠ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যায়ে বিলের বিষয়বস্তু নিয়ে আলােচনা ও বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এই দ্বিতীয় স্তরে বিলটি সম্পর্কে বিশদ আলােচনা করা হয় এবং বিলটিব ওপর ভােট গ্রহণ করা হয়।
(ঘ) তৃতীয় আলােচনা : সংখ্যাধিক্যের ভােট পেলে বিলের উত্থাপক বিলটির তৃতীয় আলােচনার (Third Reading) জন্য প্রস্তাব করেন। এই স্তরে মৌখিক সংশােধন ছাড়া অন্য কোনাে সংশােধনী প্রস্তাব গ্রহণ করা যায় না। এই পর্যায়ে বিলটি সংশ্লিষ্ট কক্ষে অনুমােদিত বা প্রত্যাখ্যাত হয়।
• রাজ্যপালের সম্মতি : বিধানসভায় বিলটি গৃহীত হলে তা রাজ্যপালের স্বাক্ষরের জন্য পাঠানাে হয়। রাজ্যপালের সম্মতি লাভ করে বিলটি আইনে পরিণত হয়।
• রাজ্যপালের অনুমােদন : সংসদের বিল পাসের প্রক্রিয়ার মতাে রাজ্য বিধানসভায় বিল পাসের জন্য সাধারণ বিলের ততীয় আলােচনা অতিক্রম করার পরে পশ্চিমবঙ্গ আইনসভার দ্বিতীয় কক্ষ না থাকায় অন্যকক্ষে বিলটি পাঠাবার প্রশ্ন নেই। বিলটিকে সরাসরি রাজ্যপালের কাছে পাঠানাে হয় তার স্বাক্ষরের জন্য। সাধারণত বিধানসভায় গৃহীত বিলে রাজ্যপাল সম্মতি দেন এবং তা আইনে পরিণত হয়। তবে রাজ্যপাল বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য বিধানসভায় ফেরত পাঠাতে পারেন। বিলটি রাজ্য বিধানসভায় আবার গৃহীত হলে রাজ্যপাল তাতে সম্মতি দিতে বাধ্য থাকেন। রাজ্যপাল কোনাে বিলকে রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠাতে পারেন। কেরলে নাম্বুদিরিপাদ সরকারের শিক্ষা বিল এবং পশ্চিমবঙ্গেবামফ্রন্টের আমলের কয়েকটি বিল তৎকালীন রাজ্যপালরা রাষ্ট্রপতির বিবেচনা এবং সম্মতির জন্য পাঠান।
বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১) রাজ্য আইনসভার গঠন সংক্ষেপে বর্ণনা করাে।
উত্তর : সংবিধানের ১৬৮(১) ধারা অনুসারে ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলির জন্য রাজ্য আইনসভা গঠনের ব্যবস্থা রয়েছে। রাজ্য আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট বা এক কক্ষবিশিষ্ট হতে পারে। বর্তমানে ভারতের ২৮টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৬টি রাজ্যে যথাক্রমে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, জম্মু ও কাশ্মীরে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা চালু রয়েছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম বিধান পরিষদ এবং নিম্নকক্ষের নাম বিধানসভা।
গঠন (Composition)
ভারতে কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় স্তরে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের নির্দেশিত ব্যবস্থা অনুসারে প্রতিটি অঙ্গরাজের জন্য আইনসভার কথা উল্লিখিত হয়েছে। সংবিধানের ১৬৮ নং ধারায় এই উল্লেখ পাওয়া যায়।
রাজ্য আইনসভা রাজ্যপাল সহ এক কক্ষবিশিষ্ট অথবা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা হতে পারে। যে সমস্ত রাজ্যে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা আছে সেখানে উচ্চকক্ষকে বলা হয় বিধান পরিষদ (Legislative Council) এবং নিম্নকক্ষকে বলা হয় বিধানসভা অর্থাৎ (Legislative Assembly)। পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা হল এককক্ষবিশিষ্ট। অঙ্গ রাজ্যের আইনসভার সদস্যদের বলা হয় বিধায়ক বা এম.এল.এ. ও এম.এল.সি.। বিধানসভা কেন্দ্রের লােকসভার ন্যায় রাজ্যের জনপ্রিয় কক্ষ। এই কক্ষের সদস্যগণ রাজ্যের জনগণের প্রত্যক্ষ ভােটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। সংবিধানের ১৬৯ নং ধারায় বলা হয়েছে যে রাজ্যের বিধানসভায় উপস্থিত এবং ভােট প্রদানকারী দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতিক্রমে বিধান পরিষদের বিলােপের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে যদি পার্লামেন্টে অনুমােদিত হয় তবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধান পরিষদ বিলুপ্ত হয়। তবে লক্ষ রাখতে হবে যে বিধানসভায় ভােটদানকারী দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য সংখ্যা যেন মােট সদস্য সংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিধান পরিষদ ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে বিলুপ্ত হয়।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা কয়টি?
উত্তর: ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা ২৮টি। - রাজ্য আইনসভার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ কে?
উত্তর: গণপরিষদের উপর ভারতীয় সংবিধান রচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। - ত্রিপুরা রাজ্যের আইনসভার নাম কী ?
উত্তর: ত্রিপুরা রাজ্যের আইনসভার নাম বিধানসভা। - সংবিধান অনুসারে অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার সদস্য সংখ্যা কত হতে পারে?
উত্তর: সংবিধান অনুসারে অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার সদস্য সংখ্যা ৬০ থেকে ৫০০-এর মধ্যে হবে। - বিধানসভার সভাপতিকে কী বলা হয়?
উত্তর: বিধানসভার সভাপতিকে অধ্যক্ষ বা স্পিকার বলা হয়। - বর্তমানে ত্রিপুরা বিধানসভার সদস্য সংখ্যা কত?
উত্তর: বর্তমানে ত্রিপুরা বিধানসভার সদস্য সংখ্যা ৬০। - কোন কোন সংশােধনী আইনে SC / ST- দের জন্য আইনসভায় আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়?
উত্তর: ৮ম, ২৩তম, ৪৫তম, ৬২তম ও ৭৯তম সংশােধনী আইনে SC / ST- দের জন্য আইনসভায় আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। - বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান করেন কে?
উত্তর: বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান করেন রাজ্যপাল। - বিধানসভার কার্যকাল কত বছর?
উত্তর: সাধারণত বিধানসভার কার্যকাল ৫ বছর। - রাজ্যপাল প্রয়ােজন মনে করলে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় কতজন সদস্যকে মনােনীত করতে পারেন?
উত্তর: রাজ্যপাল প্রয়ােজন মনে করলে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ১জন সদস্য (ইঙ্গ-ভারতীয়) মনােনীত করতে পারেন। - বিধানসভায় কোনাে বিল অর্থবিল কিনা তা নির্ধারণ করেন কে?
উত্তর: বিধানসভায় কোনাে বিল অর্থবিল কিনা তা নির্ধারণ করেন স্পিকার বা অধ্যক্ষ [১৯৯ (৩)]। - রাজ্যপাল সাধারণ অবস্থায় কাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিয়ােগ করতে বাধ্য?
উত্তর: সাধারণ অবস্থায় রাজ্যপাল বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিয়ােগ করতে বাধ্য। - রাজ্য বিধানসভার কোন্ সদস্যরা রাজ্যসভার (কেন্দ্রীয় আইনসভার উচ্চকক্ষ) প্রতিনিধিদের নির্বাচন করেন?
উত্তর: রাজ্য-বিধানসভার একমাত্র নির্বাচিত সদস্যরা রাজ্যসভার প্রতিনিধিদের নির্বাচন করেন। - সংবিধান অনুসারে [১৬৮ (১)] প্রতিটি রাজ্যে কয়টি আইনসভা থাকতে পারে?
উত্তর: সংবিধান অনুসারে প্রতিটি রাজ্যে একটি আইনসভা থাকতে পারে। - ত্রিপুরা রাজ্যের আইনসভার কয়টি কক্ষ রয়েছে?
উত্তর: ত্রিপুরা রাজ্যের আইনসভার একটি কক্ষ রয়েছে। - বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা ন্যূনতম কত হবে?
উত্তর: বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা ন্যূনতম ৪০ হবে। - বিধান পরিষদের সভাপতিকে কী বলা হয়?
উত্তর: বিধান পরিষদের সভাপতিকে বলা হয় চেয়ারম্যান। - বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য সংখ্যা কত?
উত্তর: বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য সংখ্যা ২৯৪। - বছরে কমপক্ষে কতবার বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে হয়?
উত্তর: বছরে কমপক্ষে দু-বার বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে হয়।। - বিধানসভার মধ্যে কার আচরণ আদালতের এক্তিয়ার বহির্ভূত?
উত্তর: বিধানসভার মধ্যে একমাত্র স্পিকারের আচরণ আদালতের এক্তিয়ার বহির্ভূত। - রাজ্যপাল ও বিধানসভার মধ্যে যােগাযােগের মাধ্যম হিসাবে কে কাজ করেন?
উত্তর: বিধানসভার স্পিকার রাজ্যপাল ও বিধানসভার মধ্যে যােগাযােগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করেন। - অঙ্গরাজ্যের মন্ত্রীসভা গঠন করেন কারা?
উত্তর: বিধানসভার নির্বাচনে যে দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তাদের নেতৃবৃন্দরাই মন্ত্রীসভা গঠন করে। - রাজ্য-বিধানসভার কোন সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে?
উত্তর: রাজ্য-বিধানসভার একমাত্র নির্বাচিত সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। - বিল (Bill) কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: বিল দু-প্রকারের হয়—সরকারি বিল এবং বেসরকারি বিল। - বিধানসভা এককভাবে নির্বাচিত ও পদচ্যুত করতে পারে এমন দুটি পদাধিকারীর নাম কী?
উত্তর: বিধানসভা এককভাবে নির্বাচিত ও পদচ্যুত করতে পারে বিধানসভার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে। - অঙ্গরাজ্যের আইনসভা কাদের নিয়ে গঠিত হয়?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের আইনসভা রাজ্যপাল এবং এক বা দুটি কক্ষ নিয়ে গঠিত হয়। - রাজ্যের আইনসভা কটি কক্ষবিশিষ্ট হতে পারে?
উত্তর: রাজ্যে আইনসভা এককক্ষ বা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হতে পারে। - ভারতের কোন্ কোন্ অঙ্গরাজ্যে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা আছে?
উত্তর: ভারতের বিহার, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং জম্মু কাশ্মীর রাজ্যে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা আছে। - বিধানসভা কী স্থায়ী কক্ষ, না কী অস্থায়ী?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের আইনসভার নিম্নকক্ষ বিধানসভা অস্থায়ী কক্ষ। - বিধানসভার অধ্যক্ষ (Speaker) কীভাবে নিযুক্ত হন?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার অধ্যক্ষ বিধানসভার সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন। - অঙ্গরাজ্যে জনপ্রতিনিধি কক্ষ কোনটি?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যে জনপ্রতিনিধি কক্ষ হল বিধানসভা। - বিধানসভার সদস্য পদপ্রার্থীদের ন্যূনতম বয়স কত?
উত্তর: বিধানসভার সদস্য পদপ্রার্থীদের ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর। - বিধানসভার দুটি অধিবেশনের মধ্যে ব্যবধান কত হতে পারে?
উত্তর: বিধানসভার দুটি অধিবেশনের মধ্যে ব্যবধান ৬ মাসের বেশি হতে পারে না। - বিধানসভায় নির্ণায়ক ভােট (Casting Vote) প্রয়ােগ করতে পারেন কে?
উত্তর: বিধানসভায় ‘নির্ণায়ক ভােট’ প্রয়ােগ করতে পারেন একমাত্র স্পিকার [১৮৯(১)ধারা]। - কোন্ সংবিধান সংশােধনীতে ‘দলত্যাগ নিরােধক আইন’ পাস হয়?
উত্তর: ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ৫২তম সংবিধান সংশােধনীতে ‘দলত্যাগ নিরােধক আইন’ পাস হয়। - অঙ্গরাজ্যের মন্ত্রীসভা কাজের জন্য প্রত্যক্ষভাবে কার নিকট দায়িত্বশীল থাকে?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের মন্ত্রীসভা কাজের জন্য প্রত্যক্ষভাবে বিধানসভার নিকট দায়িত্বশীল থাকে [১৬৪ (২)]। - অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় কারা সরকারি বিল উত্থাপন করতে পারেন?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় একমাত্র মন্ত্রীরাই সরকারি বিল উত্থাপন করতে পারেন। - অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপাল, বিধানসভার অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের বেতন ও ভাতা কোথা থেকে দেওয়া হয়?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপাল, বিধানসভার অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের বেতন ও ভাতা রাজ্যের সঞ্চিত তহবিল থেকে দেওয়া হয়। - এককক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা কী নামে পরিচিত?
উত্তর: এককক্ষ বিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা বিধানসভা (Legislative Assembly) নামে পরিচিত। - পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার কটি কক্ষ রয়েছে?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার একটি কক্ষ রয়েছে। - অঙ্গরাজ্যের উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদ কী স্থায়ী কক্ষ, না অস্থায়ী কক্ষ?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদ স্থায়ী কক্ষ। - অঙ্গরাজ্যের বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান কীভাবে নিযুক্ত হন?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান পরিষদের সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন। - কীসের ভিত্তিতে বিধানসভার আসন সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়?
উত্তর: জনসংখ্যার (৭৫,০০০) ভিত্তিতে বিধানসভার আসন সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। - অঙ্গরাজ্যের আইনসভার নিম্নকক্ষ বিধানসভা পরিচালনা করেন কে?
উত্তর: অধ্যক্ষবা স্পিকার অঙ্গরাজ্যের আইনসভার নিম্নকক্ষ বিধানসভা পরিচালনা করেন। - বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান, স্থগিত বা বিধানসভা ভেঙে দিতে পারেন কে?
উত্তর: রাজ্যপাল বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান, স্থগিত বা বিধানসভা ভেঙে দিতে পারেন। - রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষ বিধানসভার প্রথম ও প্রধান কাজ কী?
উত্তর: রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষ বিধানসভার প্রথম ও প্রধান কাজ হল আইন প্রণয়ন করা। - ভারতে তালিকা বহির্ভূত ‘অবশিষ্ট বিষয়’ (Residuary Powers) সম্পর্কে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা কার হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে?
উত্তর: ভারতে তালিকা বহির্ভূত ‘অবশিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। - অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় বেসরকারি বিল কারা উত্থাপন করতে পারেন?
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় বেসরকারি বিল বিধানসভার সাধারণ সদস্যরা উত্থাপন করতে পারেন। - দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা কী নামে পরিচিত?
উত্তর: দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা ‘বিধানমণ্ডল’ নামে পরিচিত। - দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষ কী নামে পরিচিত?
উত্তর: দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষ ‘বিধানসভা (Legislative Assembly) নামে পরিচিত। - পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার নাম কী?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার নাম ‘বিধানসভা’ (Legislative Assembly)। - আগে পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার কয়টি কক্ষ ছিল?
উত্তর: আগে পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট ছিল (১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দের আগে)। - বিধানসভার সদস্যদের কার্যকাল কত বছর?
উত্তর: বিধানসভার সদস্যদের কার্যকাল ৫ বছর বা বিধানসভার কার্যকালের সমান। - বিধান পরিষদের সদস্যদের কার্যকাল কত বছর?
উত্তর: বিধান পরিষদের সদস্যদের কার্যকাল ৬ বছর। - বিধানসভার সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন?
উত্তর: বিধানসভার সদস্যরা সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কের ভােটাধিকারের ভিত্তিতে জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হন। - বিধানসভার সদস্যদের ইংরেজিতে কী বলে?
উত্তর: বিধানসভার সদস্যদের ইংরেজিতে M.L.A. (Member of Legislative Assembly) বলে। - অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে কে বিধানসভা পরিচালনা করেন?
উত্তর: অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে উপাধ্যক্ষ বা ডেপুটি স্পিকার বিধানসভা পরিচালনা করেন। - রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় একজন ইঙ্গ-ভারতীয় সদস্য মনােনীত করলে বিধানসভার সদস্য সংখ্যা কত দাঁড়াবে?
উত্তর: রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় একজন ইঙ্গ-ভারতীয় সদস্য মনােনীত করলে বিধানসভার সদস্য সংখ্যা হবে ২৯৫ জন। - বিধানসভায় বেসরকারি বিল উত্থাপনের জন্য কত দিন পূর্বে নােটিশ দিতে হয়?
উত্তর: বিধানসভার বেসরকারি বিল উত্থাপনের জন্য এক মাস পূর্বে নােটিশ দিতে হয়। - বিধানসভায় আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনাে বিলকে কটি ‘পাঠ’ (Reading) অতিক্রম করতে হয়?
উত্তর: বিধানসভায় আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনাে বিলকে তিনটি ‘পাঠ’ অতিক্রম করতে হয়। - ভারতে কটি অঙ্গরাজ্যের আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হয়?
উত্তর: ভারতে ৬টি অঙ্গরাজ্যের আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হয়। - ভারতে কটি অঙ্গরাজ্যের আইনসভা এককক্ষবিশিষ্ট?
উত্তর: ভারতে ২৩টি অঙ্গরাজ্যের আইনসভা এককক্ষবিশিষ্ট। - বিধানসভার অধ্যক্ষের (Speaker) কার্যকাল কত বছর?
উত্তর: বিধানসভার অধ্যক্ষের কার্যকাল ৫ বছর। - বিধানসভার অধ্যক্ষকে পদচ্যুত করার জন্য কতদিন পূর্বে নােটিশ দিতে হয়?
উত্তর: বিধানসভার অধ্যক্ষকে পদচ্যুতকরার জন্য অন্তত ১৪ দিন পূর্বে প্রস্তাবাকারে নােটিশ দিতে হয়। - বিধানসভার শৃঙ্খলা, মর্যাদা ও সদস্যদের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব কার হাতে ন্যস্ত?
উত্তর: বিধানসভার অধ্যক্ষের হাতে বিধানসভার শৃঙ্খলা, মর্যাদা ও সদস্যদের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে। - দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম কী?
উত্তর: দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম ‘বিধান পরিষদ’ (Legislative Council)। - সংবিধানের কত নং ধারা অনুসারে সংসদ বিধান পরিষদ সৃষ্টি বা বিলােপ করতে পারে?
উত্তর: সংবিধানের ১৬৯ নং ধারা অনুসারে সংসদ বিধান পরিষদ সৃষ্টি বা বিলােপ করতে পারে। - স্বাভাবিক অবস্থায় রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা কার হাতে অর্পিত?
উত্তর: স্বাভাবিক অবস্থায় রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রাজ্য আইনসভার হাতে অর্পিত। - রাজ্য আইনসভা কোন্ তালিকাভুক্ত বিষয়ে সংসদের সঙ্গে যৌথভাবে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ভােগ করে?
উত্তর: রাজ্য আইনসভা যুগ্ম তালিকাভুক্ত বিষয়ে সংসদের সঙ্গে যৌথভাবে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ভােগ করে। - রাজ্য সরকারের কর ধার্য, কর সংগ্রহ ও ব্যয়বরাদ্দের ক্ষমতা কে নিয়ন্ত্রণকরে?
উত্তর: রাজ্য সরকারে কর ধার্য, কর সংগ্রহ ও ব্যব্যয়বরাদ্দের ক্ষমতা বিধানসভা নিয়ন্ত্রণ করে।
কুইজ সেট
1. পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা __________ বিশিষ্ট।
(A) এককক্ষ
(B) দ্বিকক্ষ
(C) বহুকক্ষ
2. রাজ্য আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম
(A) বিধানসভা
(B) লােকসভা
(C) বিধান পরিষদ
3. রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষের নাম
(A) রাজ্যসভা
(B) লােকসভা
(C) বিধানসভা
4. বর্তমানে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা আছে
(A) পশ্চিমবঙ্গে
(B) বিহারে
(C) পাঞ্জাবে
5. বর্তমানে এককক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা আছে
(A) বিহারে
(B) উত্তরপ্রদেশে
(C) পাঞ্জাবে
6. পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার সদস্য সংখ্যা হল __________ জন।
(A) ২৪৫
(B) ২৯৪
(C) ২৯৮
(D) ৫৪৫
8. বিধানসভার দুটি অধিবেশনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান __________ মাসের বেশি নয়।
(A) ৮
(B) ৯
(C) ৬
(D) ৭
9. কোনাে রাজ্যে বিধানসভায় বাণী প্রেরণ করতে পারেন সেই রাজ্যের
(A) মুখ্যমন্ত্রী
(B) রাজ্যপাল
(C) মুখ্যসচিব
(D) জেলাশাসক
10. বিধানসভার অধ্যক্ষের বেতন ও ভাতা স্থিরীকৃত হয় __________ কর্তৃর্ক।
(A) লােকসভা
(B) রাজ্যসভা
(C) বিধানসভা
(D) বিধান পরিষদ
11. কোনাে বিল অর্থ বিল কিনা তা স্থির করেন
(A) বিধানসভা
(B) বিধান পরিষদ
(C) অধ্যক্ষ
12. রাজ্যপাল এবং বিধানসভার মধ্যে যােগাযােগ রক্ষা করেন
(A) মুখ্যসচিব
(B) প্রধানমন্ত্রী
(C) অধ্যক্ষ
13. পশ্চিমবঙ্গে বিধান পরিষদের বিলুপ্তি হয় __________ খ্রিস্টাব্দে।
(A) ১৯৭১
(B) ১৯৮৪
(C) ১৯৬৯
14. বিধান পরিষদের সদস্যগণ __________ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
(A) ৫
(B) ৬
(C) ৮
15. সংবিধানের ১৬৮ (১) নং ধারা অনুসারে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য আইনসভা থাকতে পারে— __________টি।
(A) ১
(B) ২
(C) ৪
(D) ৬
16. অঙ্গরাজ্যের আইনসভা হতে পারে—
(A) দ্বিকক্ষবিশিষ্ট
(B) এককক্ষ বা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট
17. দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষকে বলা হয়—
(A) বিধান পরিষদ
(B) বিধানসভা
(C) বিধানমণ্ডল
(D) লােকসভা
18. সংসদ বা পার্লামেন্ট অঙ্গরাজ্যের আইনসভার উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদ সৃষ্টি বা বিলােপ করতে পারে সংবিধানের—__________ নং ধারা অনুসারে।
(A) ১৭০
(B) ২০১
(C) ১৬৯
19. উত্তরপ্রদেশের আইনসভা
(A) এককক্ষবিশিষ্ট
(B) দ্বিকক্ষবিশিষ্ট
(C) তিনকক্ষবিশিষ্ট
(D) বহুকক্ষবিশিষ্ট
20. পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার নাম
(A) বিধানসভা
(B) রাজ্যসভা
(C) বিধানমণ্ডল
(D) বিধান পরিষদ
21. অঙ্গরাজ্যের আইনসভার স্থায়ী কক্ষ হল
(A) রাজ্যসভা
(B) বিধানসভা
(C) বিধান পরিষদ
(D) বিধানমণ্ডল
22. বিধান পরিষদের সদস্যদের কার্যকাল __________ বছর।
(A) ৩
(B) ৫
(C) ৬
(D) ৯
23. বিধানসভার অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন __________ সদস্যদের দ্বারা।
(A) বিধান পরিষদের
(B) বিধানসভার
(C) লােকসভার
(D) রাজ্যসভার