স্বাভাবিক সংখ্যাঙ্গুলির সাথে 0 (শূন্য) সংখ্যাটিকে সংযুক্ত করলে যে সংখ্যাগুলি পাওয়া যায়, তাদের অখণ্ড সংখ্যা (whole number) বলে।
এক্ষেত্রে পরিষ্কার যে, সমস্ত স্বাভাবিক সংখ্যাগুলিই অখণ্ড সংখ্যা কিন্তু বিপরীতটি সত্য নয়।
যেমন, 1, 2, 3, 4, 5, … ইত্যাদি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা এবং –1, –2, –3,– 4, –5, … ইত্যাদি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা।
0 (শূন্য) একটি পূর্ণসংখ্যা, এটি ধনাত্মক বা ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা নয়। 0 অপেক্ষা বড়াে পূর্ণসংখ্যাগুলি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা এবং 0 অপেক্ষা ছােটো পূর্ণসংখ্যাগুলি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা |
5) কোনাে সংখ্যাকে শূন্য দ্বারা ভাগ করলে তার কোনাে অর্থ থাকে না। অর্থাৎ শূন্য দ্বারা ভাগ অসংজ্ঞাত (undefined)।
✤ জোড় বা যুগ্ম পূর্ণসংখ্যা
যে সমস্ত পূর্ণসংখ্যা 2 দ্বারা বিভাজ্য, তাদের জোড় বা যুগ্ম পূর্ণসংখ্যা (even integer) বলে। যেমন,
2,
4,
6,
8, … ইত্যাদি।
✤ বিজোড় বা অযুগ পূর্ণসংখ্যা
যে সমস্ত পূর্ণসংখ্যা 2 দ্বারা বিভাজ্য নয়, তাদের অযুগ্ম পূর্ণসংখ্যা (odd integer) বলে। যেমন,
1,
3,
5,
7, … ইত্যাদি।
✤ জোড় ও বিজোড় সংখ্যার ধর্ম
1) দুটি জোড় সংখ্যার সমষ্টি ও অন্তর সর্বদাই জোড় সংখ্যা।
2) দুটি বিজোড় সংখ্যার সমষ্টি ও অন্তর সর্বদাই জোড় সংখ্যা।
3) একটি জোড় ও একটি বিজোড় সংখ্যার সমষ্টি ও অন্তর সর্বদাই বিজোড় সংখ্যা |
4) দুটি জোড় সংখ্যার গুণফল সর্বদাই জোড় সংখ্যা।
5) দুটি বিজোড় সংখ্যার গুণফল সর্বদাই বিজোড় সংখ্যা |
6) একটি জোড় ও একটি বিজোড় সংখ্যার গুণফল সর্বদাই জোড় সংখ্যা |
✤ মূলদ সংখ্যা
যে সমস্ত সংখ্যাকে
আকারে প্রকাশ করা যায়, যেখানে p ও q দুটি পূর্ণসংখ্যা এবং
, তাদের মূলদ সংখ্যা (rational number) বলে। অর্থাৎ যে সংখ্যার দশমিক আকার আবৃত্ত ও সসীম তারাই মূলদ। যেমন, 7,
, 0.26,
,
,
,
,
,
,
ইত্যাদি মূলদ সংখ্যা |
NOTE :(i) সমস্ত পূর্ণসংখ্যাই মূলদ, কিন্তু সমস্ত মূলদ সংখ্যা পূর্ণসংখ্যা নয়। (ii) যে-কোনাে ধনাত্মক পূর্ণবর্গ সংখ্যার বর্গমূল একটি মূলদ সংখ্যা।
মূলদ সংখ্যার ধর্ম :
1) যে-কোনাে দুটি মূলদ সংখ্যার যােগফল, বিয়ােগফল, গুগফল ও ভাগফল (শূন্য দিয়ে ভাগ ছাড়া) একটি মূলদ সংখ্যা হয়।
2) মূলদ সংখ্যা বিনিময় (commutative), সংযােগ (associative) এবং বিচ্ছেদ (distributive) নিয়ম সিদ্ধ করে।
3) a ও b দুটি মূলদ সংখ্যা হলে, হয় a> b অথবা a = b অথবা a < b হবে।
4) a, b, c তিনটি মূলদ সংখ্যা এবং a< b, b < c হলে, a < c হবে।
5) মূলদ সংখ্যা সর্বত্র নিবিড় (dense) অর্থাৎ দুটি প্রদত্ত মূলদ সংখ্যার মধ্যে অসংখ্য (uncountable) মূলদ সংখ্যা আছে|
✤ অমূলদ সংখ্যা
যে সমস্ত সংখ্যাকে
আকারে প্রকাশ করা যায় না, যেখানে p ও q দুটি পূর্ণসংখ্যা এবং
, তাদের অমূলদ সংখ্যা (irrational number) বলে। অর্থাৎ যে সংখ্যার দশমিক আকার অনাবৃত্ত ও অসীম তারাই অমূলদ। যেমন,
,
,
,
,
,
π,
e, 1.212112111211112…, 5.0242442444244442… ইত্যাদি অমূলদ সংখ্যা।
NOTE : দুটি প্রদত্ত অমূলদ সংখ্যার মধ্যে অসংখ্য মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা আছে।
✤ বাস্তব সংখ্যা
সমস্ত মূলদ ও অমূলদ সংখ্যাকে সংযােজন করে যে সমস্ত সংখ্যা পাওয়া যায়, তাদের বাস্তব সংখ্যা (real number) বলে।
✤ বীজগাণিতিক সংখ্যা
যেসব সংখ্যা কোনাে বীজগাণিতিক সমীকরণের মূল (root) বা সমাধান (solution) হিসেবে পাওয়া যায়, তাদের বীজগাণিতিক সংখ্যা (algebraic number) বলে।
অর্থাৎ সমস্ত মূলদ ও অমূলদ সংখ্যাই বীজগাণিতিক সংখ্যা। যেমন, 3, –2,
,
,
ইত্যাদি বীজগাণিতিক সংখ্যা।
✤ অবীজগাণিতিক সংখ্যা
যেসব সংখ্যা কোনাে বীজগাণিতিক সমীকরণের মূল (root) বা সমাধান (solution) হিসেবে পাওয়া যায় না, তাদের অবীজগাণিতিক সংখ্যা (non-algebraic or transcendental number) বলে। যেমন, π , e ইত্যাদি অবীজগাণিতিক সংখ্যা।
NOTE : বীজগাণিতিক সংখ্যা মূলদ বা অমূলদ হতে পারে। কিন্তু অবীজগাণিতিক সংখ্যা সবসময় অমূলদ হবে।
✤ ধ্রুবক রাশি
গাণিতিক নিয়ম বা সমীকরণের অন্তর্গত কোনাে বাস্তব রাশি অথবা প্রতীকের মান যদি পরিবর্তনশীল না হয়, তবে সেই রাশিকে ধ্রুবক রাশি (constant) বলে। যেমন, 1, 2, 3,
,
, –2 ইত্যাদি ধ্রুবক রাশি।
✤ চলরাশি
গাণিতিক নিয়ম বা সমীকরণের অন্তর্গত কোনাে বাস্তব রাশির মান যদি পরিবর্তনশীল হয়, তবে সেই রাশিকে চলরাশি বা বাস্তব চলরাশি (variable) বলে। যেমন, x = y,
সমীকরণ দুটিতে x ও y উভয়ই চলরাশি।
✤ বিস্তার
a ও b দুটি বাস্তব সংখ্যা এবং a< b হলে, a ও b-এর মধ্যবর্তী সমস্ত বাস্তব সংখ্যার সংকলনকে a ও b-এর বিস্তার (interval) বলা হয়।
x সংখ্যাটি a ও b-এর বিস্তারের অন্তর্গত হলে, বিস্তারকে সাধারণত চারটি নিয়মে প্রকাশ করা হয়— (1) a <x< b, (2)
, (3)
, (4)
✤ বাস্তব সংখ্যার পরম মান
একটি বাস্তব সংখ্যা ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক যাই হােক না কেন, পরম মান (absolute value) বলতে সংখ্যাটির ধনাত্মক মান বা সাংখ্যমানকেই বােঝায়।
যে-কোনাে বাস্তব সংখ্যা x-এর পরম মান |x| প্রতীক দ্বারা প্রকাশ করা হয় এবং এর সংজ্ঞা নিম্নরূপ :
|x| = x, যখন x > 0
= 0, যখন x = 0
=-x, যখন x < 0
উদাহরণ : |3| 3, |5| = 5, |0| = 0, |-3| = 3, |5| = 5 ইত্যাদি |
✤ পরম মানের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য
x, y যে-কোনাে বাস্তব সংখ্যা হলে—
(1) |x| = |-x|, (2) |x + y|
|x| + |y|, (3) |x-y|
|x| + |y|, (4) |xy| = |x ||y|, (5) |
| = |
| হলে,
, (6) |x|
y হলে, –y
x < y হবে। (7) |x|
y হলে, |x|
y অথবা |x|
-y হবে।
(8)|x- a| y হলে a-y x a + y হবে, যেখানে a 0। (9) |x- a| y হলে, x a + y অথবা, x a– y হবে, যেখানে a 0 | (10) |x-y| = |y-x|, (11) |x| – |y| |x-y|
✤ সংখ্যার সমতা
দুটি সংখ্যা a এবং b-এর মধ্যে সমতা আছে বলা হবে যখন সংখ্যা দুটি একই বাস্তব মান গ্রহণ করে এবং সেক্ষেত্রে a = b আকারে সমতাকে চিহিত করা হয়। একটি রাশি x-এর মান 2 হলে, লেখা হবে x = 2 ||
✤ অসমতা
বাস্তবে দুটি রাশি সর্বদা একই মান গ্রহণ করতে নাও পারে। সেক্ষেত্রে একটি মান অপরটির বেশি বা কম হতে পারে। এই ঘটনা থেকে অসমতার সূত্রপাত। বাস্তবে অসমতাকে প্রকাশ করার জন্য চারটি গাণিতিক চিহ্ন>, <,
,
ব্যবহার করা হয়।