রাজপুত – আঞ্চলিক শক্তির উত্থান – আধুনিক যুগের ইতিহাস (Rajput dynasties and states)
রাজপুত বংশ : অষ্টাদশ শতকে সবচেয়ে বিখ্যাত রাজা ছিলেন দ্বিতীয় রাজা সােয়াই জয় সিংহ (১৬৯৯-১৭৪৩)। ১৭২৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি তার নিজের নামে জয়পুর শহর প্রতিষ্ঠা করেন। অম্বরের আগের রাজধানী কাছােয়া তার সময় গুরুত্ব হারায়। তার প্রতিষ্ঠিত রাজবংশের নাম ধুন্দার রাজবংশ। তার সাম্রাজ্য গঠিত ছিল অম্বর, দোসা এবং সােয়া নিয়ে। ১৭ ২১ খ্রিস্টাব্দে তিনি সৈয়দ বংশকে সরিয়ে দিয়ে মামুদ শাহকে সিংহাসনে বসান। তিনি সংস্কৃত, ফার্সি ভাষা, অঙ্ক, জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি দিল্লী, জয়পুর, উজ্জয়িনী, মথুরা ও বারানসীতে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (Observatory) নির্মাণ করেন। পাের্তুগালের রাজা তার কাছে ডেলাহায়ারের জ্যোতির্বিদ্যার টেবিল পাঠালে তিনি তার ভুল ধরেন। উলুঘ বেগের যন্ত্রপাতি যেগুলি সমরখন্দ ও তুরস্কের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করত তারা ভুল ধরতে ব্যর্থ হন। ১৭২৩ খ্রিস্টাব্দে সােয়াই জয় সিংহ জিয়ামহম্মদ শাহি নামে তার টেবিল প্রকাশ করেন। জগন্নাথ ভট্ট ছিলেন তার একজন অনুরাগী। জয়পুর শহরের পরিকল্পক দলরাম ছিলেন তার মুখ্য বাস্তুকার। জয়সিংহ বহু সরাইখানা নির্মাণ করেন। তিনি সংস্কৃতে ইউক্লিডের ‘এলিমেন্টস অফ জিওমেট্রি’ বইটি অনুবাদ করেন এবং নেপিয়ারের ‘লগারিদমস\’ গ্রন্থটিও সংস্কৃতে অনুবাদ করেন। সােয়াই জয় সিংহ ছিলেন সঙ্গীত ও নারী ভক্ত। তিনি ৩১ টি বিবাহ করেন। তিনি আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপন করতেন। তার মৃত্যুর পর ব্রহ্মপুরীতে একটি মার্বেল পাথরের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়।